অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নিজের বিয়েতে অমত থাকা সত্ত্বেও পিতার ইচ্ছায় বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ৮ম শ্রেণী পড়–য়া এক কিশোরী। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে প্রশাসন নিষেধ করলেও তা উপেক্ষা করেছে কিশোরীর পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
জানা গেছে, উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভালুকশী গ্রামের কাজী মোস্তফা তার ৮ম শ্রেণী পড়–য়া কন্যা তামান্নার সাথে একই গ্রামের জালাল ফকিরের ছেলে রুহুলের সাথে বিয়ে ঠিক করে। বিয়েতে প্রচন্ড অমত থাকায় তামান্না পালিয়ে তার মামা বাড়ি চলে যায়। গত ২০মে শুক্রবার বাদ জুমা বিয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল। মেয়েকে আনতে দেরী হওয়ায় তারিখ পরিবর্তন করা হয় ২২ মে রোববার। কিন্তু প্রশাসন বিষয়টি জেনে ফেলায় তারা ভালুকশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ওই বিয়ে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষক কিশোরীর পিতাকে বিষয়টি জানালে তড়িঘড়ি করে রাতেই পাত্রপক্ষের লোকজন ডেকে বিয়ের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায় স্থানীয় উত্তর ভালুকশী ফকিরবাড়ি জামে মসজিদের ইমামকে দিয়ে সরা পড়ানো হয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিয়ে পাকা করতে অতি গোপণীয়তায় সেখানে পাত্রপক্ষের এনায়েত ফকির, কবির ফকির, কামাল ফকির, বাচ্চু ফকির, ছেলের পিতা রুহুল ফকির ও স্থানীয় ইউপি সদস্য অলিউর ফকির এবং পাত্রীপক্ষের শাহ আলম কাজী, শের আলী কাজী, সুরুজ কাজী, ইদ্রিস কাজী, মেয়ের পিতা মোস্তফা কাজীসহ আরও বেশকিছু লোকজন উপস্থিত ছিলেন। গত ২২ এপ্রিল বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান যেখানে বরিশাল জেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা দিয়েছেন এবং উপজেলা প্রশাসন বিয়ে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তা উপেক্ষা করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একজন জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন করার মত দু:সাহস হয় কি করে সেটাই ভেবে দেখার বিষয়।